নিউজ ডেক্সঃ- গত পহেলা নভেম্বর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের কর্মরত উপ পরিচালক রবিউল হোসেন ও ডিসপ্লে অফিসার আজাদ সরকার।
শুক্রবার বিকেলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তারা এই প্রতিবাদ জানান। প্রতিবাদে তারা বলেন কিছু কুচক্রিমহল সাংবাদিকদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে কিছু পত্রিকা ও অনলাইন পোর্টালে আমাদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করেছেন যা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। যার সাথে আমাদের কোন সম্পৃক্ততা নেই। প্রকাশিত সেই সংবাদের আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাই।
প্রতিবাদে তারা আরো উল্লেখ করেন, এন্টিক পাচার ও বিনষ্টকরণ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য যে, ফাউন্ডেশনের সকল নিদর্শন (এন্টিক) রেজিস্টারভূক্ত হয়ে রেজিস্ট্রেশন অফিসারের তত্ত্বাবধানে স্টোরে তালাবদ্ধভাবে সংরক্ষিত থাকে। কর্তৃপক্ষের (পরিচালকের) অনুমোদন ব্যতিরেকে এন্ট্রিকস্ নেয়া/স্থানান্তর করা যায় না। জাদুঘরে প্রদর্শন কিংবা সংরক্ষণের প্রয়োজন হলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি গ্রহণ করে রেজিস্ট্রেশন অফিসারের মাধ্যমে যথানিয়মে স্টোর থেকে এন্টিকস্ বের করা হয়। এছাড়া কোন এন্টিকসে্র বিনষ্টের প্রয়োজন হলে বিনষ্ট করার জন্য সংশ্লিষ্ট কমিটির সুপারিশের প্রয়োজন হয়। ব্যক্তিগতভাবে কোন নিদর্শন পাচার বা বিনষ্টের ক্ষমতা কারো নেই। সুতরাং, এ বিষয়ে যে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, মিথ্যা, বিভ্রান্তিমূলক ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
ফাউন্ডেশনের গেইটে অর্থ আত্মসাৎতের অভিযোগের বিষয়ে উল্লেখ্য যে, প্রতিদিন ফাউন্ডেশনের গেইটে বিক্রিত টিকেটের অর্থ টিকেট সেলার মুড়িসহ অফিস সময় শেষে নির্দিষ্ট রেজিস্টারের মাধ্যমে হিসাব শাখায় জমা প্রদান করে। হিসাব শাখা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারী পরদিন উক্ত জমাকৃত অর্থ ব্যাংকে জমা প্রদান করে। ব্যাংকে অর্থ জমা ভাউচার পরিচালক এবং উপপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ নিয়মিত পর্যাবেক্ষণ করেন। সুতরাং, গেইটে বিক্রিত টিকেটের অর্থের ৭০% আত্মসাৎ এ সংবাদ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
মেলার স্টল বিক্রয় অর্থ আত্মসাৎতের বিষয়ে উল্লেখ্য যে, অনলাইনে ফাউন্ডেশনের স্টল বিক্রয়ের আবেদন এবং ফি জমা নেয়া হয়। জমাকৃত ফি এর অর্থ টেলিটকের মাধ্যমে পরিচালক বালোকাফা বরাবর সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাব নম্বরে জমা হয়। উপজেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে লটারির মাধ্যমে স্টলের বরাদ্দ নির্ধারণ করা হয়। সুতরাং, স্টল বিক্রয়ের অর্থ আত্মসাৎতের অভিযোগটি অবান্তর ও মিথ্যা।
সিলেকশন গ্রেড প্রদানের বিষয়ে উল্লেখ্য যে, কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যাতিরেকে ফাউন্ডেশনের কোনো কর্মচারী নিজে নিজে বেতন-ভাতা/সিলেকশন গ্রেড/টাইমস্কেল বা যে কোনো প্রকার আর্থিক সুবিধা গ্রহণ/উত্তোলন করতে পারেন না। সরকারি বিধি অনুসরণ করে প্রাপ্যতা অনুযায়ী হিসাব শাখার প্রণয়নকৃত বেতন-ভাতার/ফিক্সেশন অথবা যে কোনো প্রকার আর্থিক সুবিধার বিল পরিচালক কর্তৃক অনুমোদিত হলে তাঁর কর্তৃক স্বাক্ষরিত চেক এবং এ্যাডভাইস লেটার যথানিয়মে ফাউন্ডেশনের সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাব নম্বরে জমা হয়। এ্যাডভাইস লেটার অনুযায়ী কর্মচারীর নির্ধারিত ব্যাংক হিসাব নম্বরে অনুমোদিত পরিমাণ বেতন-ভাতার অর্থ জমা হয়। সুতরাং, এ সম্পর্কিত তথ্য মিথ্যা এবং বানোয়াট।
২০০০ সালে তৎকালীন সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের কোন তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয় ফাউন্ডেশন দপ্তরে কিংবা আমার জানা নেই। সুতরাং, উক্ত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে কাঠের তৈরি ময়ূরপঙ্খী নৌকা, ঘোড়া-হাতি, পালঙ্ক, তামা-কাসার নির্মিত রাধা কৃষ্ণের মন্দির ইত্যাদি এন্ট্রিক পাচার কিংবা বিনষ্টের সাথে জড়িত করে যে সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, মিথ্যা ও বানোয়াট।
সংবাদে অডিট আপত্তির বরাত দিয়ে সাবেক পরিচালক শেখ আলাউদ্দিনের স্বাক্ষরিত পত্রের মাধ্যমে অর্থ ফেরতের বিষয় প্রকাশ করা হয়েছে। উল্লেখ্য যে, অডিট অধিদপ্তরের নিরীক্ষা আপত্তির যে বরাত দেয়া হয়েছে সে অডিট আপত্তির প্রতিবেদন আদৌ সঠিক নয়। এ ধরনের অডিট রিপোর্ট ফাউন্ডেশনে আসেনি। এ ক্ষেত্রে উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে মিথ্যা অডিট রিপোর্ট প্রণয়নপূর্বক উক্ত অভিযোগ আনা হয়েছে। নিরীক্ষা দপ্তরে খোঁজ নিলে এ অডিট রিপোর্টের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যাবে না বলে নিশ্চিতভাবে মনে করি। সুতরাং, এ সম্পর্কিত আপনার প্রকাশিত সংবাদটি সঠিক নয়।
উল্লিখিত মিথ্যা, বানোয়াট ও বিভ্রান্তিমূলক সংবাদসমূহ প্রকাশের মাধ্যমে সরকারের একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন এর এবং এ প্রতিষ্ঠানের নিম্নস্বাক্ষরকারী কর্মচারীদ্বয়ের ভাবমূর্তি খুন্ন করা হয়েছে। ছবিসহ মিথ্যা বানোয়াট কল্পনাপ্রসূত এ ধরনের সংবাদ পরিবেশন করে সমাজ এবং পরিবারের কাছে আমাদের হেয় করা হয়েছে। এছাড়াও ‘দৈনিক খবর-২৪‘ ও ‘দৈনিক সোনারগাঁও প্রকাশ‘ পত্রিকায় ‘জাতীয় ঐতিহ্য সম্পদ রক্ষা পরিষদ, সোনারগাঁও‘ এর করা মন্তব্য মিথ্যা ও ভিত্তিহীণ।
সুতরাং, প্রকাশিত এ সংবাদের বিষয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সে সংগে এ প্রতিবাদ আপনার সংবাদপত্রে ছাপানোর জন্য সবিনয় অনুরোধ জানাচ্ছি। আশাকরি এ প্রতিবাদলিপি প্রকাশ করে সমাজ ও পরিবারের কাছে সঠিক তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে ভাবমূর্তি খুন্ন হওয়া থেকে রক্ষা করবেন যাতে সম্মানহানী থেকে পরিত্রান পাওয়া যায়।