মোঃ নুর নবী জনিঃ-দুর্গা পূজা উপলক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁয়ে পূজা উদযাপন কমিটির সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছে সেনাবাহিনী।
সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন গৌড় নিতাই মন্দিরে মেজর জুবায়েরের (পিএসসি) সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সভায় দুর্গা পূজা উদযাপন কমিটির সদস্যরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি এবং স্থানীয় প্রশাসনের লোকজন।
সভায় মেজর জুবায়ের বলেন, আসন্ন দুর্গাপূজা উৎসব মুখর ও শান্তিপূর্ণ ভাবে উদযাপনের জন্য পূজা কমিটির সদস্য, হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি ও এলাবাবাসীরকে নিয়ে একত্রিত হয়েছি। এ সময় পূজা কমিটি কয়েকটি পরামর্শ তুলে ধরেন।
তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বিদ্যুৎ। পুজোর সময় যাতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। কারণ, উৎসব চলাকালীন বিদ্যুৎ বিভ্রাট শুধুমাত্র ধর্মীয় ক্রিয়াকলাপই ব্যাহত করবে না, বিশেষ করে মন্দিরগুলির নিরাপত্তার জন্য আলোর দরকার। এছাড়া, পূজার সময় মন্দিরের নিরাপত্তার পাশাপাশিপস্থিতি দর্শনার্থীর নিরাপত্তার জন্যও পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর টহল বাড়ানোর অনুরোধ করেন কমিটির নেতারা।
পানাম সিটিতে অবস্থিত একটি মন্দিরের ব্যাপারেও আলোচনা হয়েছে। ওই মন্দিরের ব্যবস্থাপনা নিয়ে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় এবং সরকারের প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের মধ্যে বিরোধ চলছে।
এ সমস্যা সমাধানেও হিন্দু সম্প্রদায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিষয়টি নিস্পত্তি করতে সেনাবাহিনীর সহায়তা চেয়েছে। এছাড়া, অপ্রয়োজনীয় শব্দ এবং মাদকের ব্যবহার বন্ধ করা, পূজার সময় উচ্চস্বরে গান- বিশেষ করে ডিজে গান বন্ধ করার অনুরোধ করেন তারা। কমিটির নের্তৃবৃন্দ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এই ধরনের গান-বাজনা অনুষ্ঠানের ধর্মীয় গাম্ভীর্যকে বিঘ্নিত করে।এ সময় রাত কমিটিকে ১০টার মধ্যে পূজার কার্যক্রম শেষ করার আহ্বান জানানো হয়।
মেজর জুবায়ের বিদ্যুৎ নিয়ে উদ্বেগের কথা স্বীকার করেন পূজা কমিটিকে আশ্বস্ত করেন যে, বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরা হবে। তিনি আরো বলেন, পূজার সময় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে।
অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতিতে ব্যাকআপ জেনারেটরের ব্যবস্থা করার পরামর্শ দেন অনেকে। মন্দিরগুলিতে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনেরও সুপারিশ করেন অনেকে।
মেজর জুবায়ের প্রতিটি মন্দিরের জন্য স্বেচ্ছাসেবকদের একটি দল গঠনের উপর জোর দেন।এই স্বেচ্ছাসেবকদের দল উৎসবে অংশগ্রহণকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে। পূজায় সার্বিক নিরাপত্তার জন্য একটি হটলাইন নাম্বারও চালু করার পরামর্শ দেন অনেকে।পূজার পুরো সময় জুড়ে মন্দিরে এবং এর সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের সর্বোচ্চ অ্যাফোর্ট দেবেন বলে নিশ্চিত করেন মেজর জুবায়ের।
যে কোনো উদ্ভূত পরিস্থিতি বা বিশৃঙ্খলা দ্রুত মোকাবেলায় সেনাবাহিনী সার্বক্ষণিক সতর্কতা বজায় রাখবে। পানাম সিটি এলাকায় মন্দির নিয়ে হিন্দু সম্প্রদায় এবং প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের মধ্যে চলমান বিরোধের বিষয়ে মেজর জুবায়ের সম্প্রদায়কে আশ্বস্ত করেছেন যে সমস্যাটি দ্রুত সমাধানের জন্য উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে যোগাযোগ করা হবে।
মেজর জুবায়ের সবাইকে সম্প্রীতি ও সহযোগিতা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, পূজা উদযাপনে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী সবকিছু করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।