নিজস্ব প্রতিনিধিঃ-নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁয়ে আইন অমান্য করে অবাধে ফসলি জমির মাটি কেটে ও ড্রেজারের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করে নেওয়া হচ্ছে হামেসা গ্রুপে। এতে কমে যাচ্ছে এলাকার ফসলি জমির পরিমাণ। আবার মাটি পরিবহনে ব্যবহার করা হচ্ছে স্থানীয় ইউনিয়ন ও গ্রামীণ সড়ক। ফলে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রাস্তাগুলো। এতে রাস্তায় গাড়ি চলাচলে সমস্যাসহ এলাকা ধুলা-বালিতে একাকার হয়ে যাচ্ছে। মানুষের মধ্যে অ্যাজমাসহ বিভিন্ন রোগ দেখা দিচ্ছে।
ভুক্তভোগী কৃষকেরা জানান, উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের চর কামালদী এলাকায় আইন অমান্য করে অবাধে ফসলি জমির মাটি কেটে ও বালু উত্তোলন করছে প্রভাবশালী হামেশা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: আশাদ। দীর্ঘদিন ধরে ফসলি জমির মাটি কেটে কোম্পানিতে নিচ্ছে। প্রভাবশালী ঐ মহলটির হুমকির মুখে কেউ মুখ খুলতে বা বাধা দিতে পারছে না। এলাকায় এভাবে ফসলি জমি থেকে মাটি কাটা হলেও এর বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না স্থানীয় প্রশাসনকে ।
ভুক্তভোগী এলাকাবাসী জানান, জমির মাটি ‘ভেকু ’ দিয়ে এমন খাড়াভাবে কাটা হয়েছে এবং ড্রেজার বসিয়ে কাটা হচ্ছে যাতে অল্প কয়েক দিনের মধ্যে পার্শ্ববতী জমির মাটি ভেঙে পড়ে। তখন পার্শ্ববর্তী ঐ জমি আর ফসল ফলানোর উপযোগী থাকে না। তখন পার্শ্ববর্তী জমির মালিককে দালালের মাধ্যমে তাদের জমি কম মুল্যে বিক্রি করতে বাধ্য করা হবে।
এ বিষয়ে জমির মালিক মোহাম্মদ ইউনুস আলী মাস্টারসহ কয়েকজন মিলে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর। এছারাও অনুলিপি দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক, সোনারগাঁ সহকারী কমিশনার ভূমি ও সোনারগাঁ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর।
লিখিত অভিযোগ-দায়েরের পরও এসব মাটি কাটার কাজ চললেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি স্থানীয় প্রশাসন। এতে করে হুমকির মুখে পড়েছে উপজেলার অধিকাংশ ফসলি জমি, বিপর্যস্ত হচ্ছে রাস্তাঘাট, বিপন্ন হচ্ছে জনজীবন। এই অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধের প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহনে ও কৃষিজমি রক্ষার্থে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।
এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে হামেশা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আসাদ বলেন,আপনাদের যা ইচ্ছে তা লিখে দেন, এই বিষয় নিয়ে আমাকে আর ফোন করবেন না বলে লাইনটি কেটে দেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আফরোজা সুলতানা জানান, কৃষি জমির মাটি কাটার ফলে পরিবেশ বিপর্যয়ের পাশাপাশি ফসলি জমির উর্বরা শক্তি আশঙ্কাজনকভাবে হ্রাস পায়। এ অবস্থা চলতে থাকলে ফসলি জমিগুলো ভবিষ্যতে বন্ধ্যা জমিতে পরিণত হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ জানান অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত-পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।